পেকুয়া প্রতিনিধি: বারবাকিয়া রেঞ্জের বন কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান বারবাকিয়া রেঞ্জের পাহাড় খেঁকো, বনখোঁকো, বালু খেঁকোদের জন্য মূর্তিমান আতংক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
যোগদানের পর থেকে পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে তিনি নির্ঘূম ও অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশংসায় ভাসছেন ওই কর্মকর্তা।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি যোগদান করেন।
যোগদানের পর থেকে তিনি বারবাকিয়া রেঞ্জের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে কাজ শুরু করেন। ৫ মাসে তিনি পাহাড় খেকো, গাছ লুটকারী ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা দায়ের করেন, গাছ উদ্ধার করেন, গাড়ি আটক করেন আর নিয়মিত অভিযান তো রয়েছেই।
এই ছাড়াও তিনি ৩০ শে এপ্রিল জব্দ করেন ৪টি বালু তোলার সেলু মেশিন। শুধু তাই নয় পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে তিনি যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে গাছ জব্দ করেন।
স্বল্প সময়ে তার এই তৎপরতার কারনে স্থানীয় পাহাড় খেকো চক্রের রোষালনে পড়তে হয় ওই কর্মকর্তাকে।
জানা যায়, পাহাড়খেকো সিন্ডিকেটটি অবৈধ সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে এখন বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচারেও লিপ্ত রয়েছেন। বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা নানান অপবাদ দিচ্ছেন।
জানা যায়, বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতাধীন টৈটং সংগ্রামের জুম এলাকার জহির ছড়া, তক্তার ছড়া, নাপিতার ছড়া ও বদির ঝিরিসহ এসব এলাকায় ২০০৬ ও ২০০৭ অর্থ বছরে ৮০ হেক্টর বাগান সামাজিক বনায়নের আওতায় ৮০ জন উপকার ভোগীর অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে আবার সেই বাগান ২০১৭/১৮ সালে ৮০ জন উপকারভোগীর বাগান ২শত জনের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়। তাতেই বাধে উপকারভোগীদের মাঝে বিপত্তি। যার ফলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট ওই বনায়নের গাছ লুঠ করে। কিন্ত এখন সুকৌশলে সেই গাছ লুটের বিষয়টি তুলে দেয়া হচ্ছে বর্তমান রেঞ্জ কর্মকর্তার ঘাড়ে।
স্থানীয় টৈটং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী জেড এম মুসলেম উদ্দিন বলেন, ২০০৬ সালে আমাদেরকে বরাদ্দ দেয়া এই সামাজিক বনায়ন আওয়ামী লীগের ২৪ সালের নির্বাচন ও ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে নির্বিচারে সাবাড় করা হয়েছে। বর্তমানে সামাজিক বনায়নে গাছ কাটার বিষয়টি সত্য নয়। এটি অনেক আগে কাটা হয়েছে। মুলত এখানে বিশাল একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা এখনো সক্রিয়। তবে বাগানটি অনেক আগেই গাছ কেটে শেষ করেছে ওই সিন্ডিকেটটি।
স্থানীয় পরিবেশবাদীরা জানান, মুলত এখানে বড় ধরনের সিন্ডিকেট জড়িত যারা নিয়মিত পাহাড় কেটে গাছ কেটে বিক্রি করে। এখন রেঞ্জ কর্মকর্তা তাদের সুযোগ দিচ্ছে মুঠোয়। সে জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানানো দরকার।
বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান বলেন, আমি আমার যে দায়িত্ব সেটা পালন করছি, যারা পাহাড় কাটবে, গাছ কাটবে তাদের কোনো ছাড় নেই। আমি তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। ফলে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হুমকি অব্যাহত রেখেছে তাতে আমি ভয় পাইনা। স্পষ্ট করে বলতে চাই পরিবেশ ধ্বংস কারীদের শেকড় উপড়ে ফেলবো যতদিন থাকি এটা আমার চাকুরির শপথ। অপপ্রচারের বিষয়ে বলেন, ভালো কাজ করলেও একটি পক্ষ সুবিধা না পেয়ে সংক্ষুব্ধ হবে অপপ্রচার তাদের একটা হাতিয়ার মাত্র তাতে আমি ভয় পাইনা।