মো. কামাল উদ্দিন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার নারিকেলতলায় অন্তঃস্বত্বা গৃহবধূ মাহাবুবা আক্তারকে (২৪) নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে। হত্যার চার বছর পর অবশেষে মূল পরিকল্পনাকারী ভাড়াটিয়া খুনি মো. আরিফকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালের ১৬ জুলাই। জুমার নামাজের সময় নিজের ভাড়াবাসায় নামাজরত অবস্থায় ছয় মাসের অন্তঃস্বত্বা মাহাবুবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। নিহতের ভাই মো. মিশকাতের এজাহারের ভিত্তিতে ইপিজেড থানায় মামলা হয়।
পুলিশ ও পিবিআই-এর তদন্তে উঠে এসেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং শ্বাশুড়ির প্রতি অবাধ্য হওয়ার অভিযোগে মাহাবুবাকে হত্যা করা হয়। স্বামী মো. আব্দুল গোফরান ও শ্বাশুড়ি নাজনিন বেগম দেড় লাখ টাকায় ভাড়াটিয়া খুনি আরিফকে ‘চুক্তিবদ্ধ’ করেন। আরিফ আরও তিন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে হত্যার কাজ সম্পন্ন করে।
ঘটনার পর শ্বাশুড়ি নাজনিন বেগম ঘটনাটিকে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের সদস্যরা হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
প্রাথমিক তদন্তে ইপিজেড থানা পুলিশ স্বামী ও শ্বাশুড়িকে গ্রেফতার করলেও মূল হোতা আরিফকে ধরতে পারেনি। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর এসআই মো. মহসীন চৌধুরী (পিপিএম)’র নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ আগস্ট আতুরার ডিপো এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফকে গ্রেফতার করে।
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে আরিফ জানান, হত্যাকাণ্ডের সময় শ্বাশুড়ি নাজনিন বেগম ও স্বামী গোফরান ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। হত্যার পর প্রাপ্ত দেড় লাখ টাকা তিনি ও তার সহযোগীরা ভাগ করে নেন। ঘটনার পর আরিফ মহেশখালীতে আত্মগোপনে থাকেন এবং পরে চট্টগ্রামে হকারি শুরু করেন।
পিবিআই জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও তিন ভাড়াটে খুনি এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য- মাহাবুবা ছিলেন স্বামী গোফরানের তৃতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বাশুড়ির হাতে নির্যাতনের শিকার হতেন তিনি। অবাধ্যতার অভিযোগ তুলে শেষ পর্যন্ত তার জীবন কেড়ে নেওয়া হয়।