আবু রায়হান, স্টাফ রিপোর্টার– বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলায় ভয়াবহ নদীভাঙনের কারণে শতশত মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ভাঙনের তীব্রতায় ইতোমধ্যেই রিং বাঁধসহ শত বিঘা আবাদি জমি, বসতঘর, গাছপালা এবং স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের শরণখোলা বাজার থেকে তেড়াবেকা ও বগী এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রিং বাঁধ বিভিন্ন পয়েন্টে ধসে পড়ছে। নদীর পানি প্রতিনিয়ত ভাঙন সৃষ্টি করে নতুন নতুন এলাকা গ্রাস করছে।
ভুক্তভোগী মোঃ হালিম, মোঃ ইউসুফ, রহিমা বেগম ও জাহানারা বেগম জানান, “আমাদের জমি-জমা, বসতঘর, গাছপালা সব নদীতে চলে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি, কখন আবার নদী আরও এগিয়ে আসে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙন তীব্র রূপ নিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মাঝে মাঝে ভাঙনকবলিত অংশে সাময়িক সংস্কার কাজ হলেও তা কার্যকর হয়নি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বলেন,
“পরিস্থিতি এখন চরমে। দ্রুত টেকসই রিং বাঁধ নির্মাণ না হলে অচিরেই বিস্তীর্ণ জনপদ মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন,
“বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় পূর্বে যেভাবে সংস্কার করা হয়েছিল, এবারও প্রয়োজনে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে রিং বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নদীগুলোর প্রবাহ ও তোড় আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। ফলে প্রতিবছর উপকূলীয় অঞ্চলের নদীবাঁধ ও জনপদ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে। সময়মতো টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে শরণখোলার মতো আরও অনেক জনপদ বিলীন হয়ে যেতে পারে।