বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মন্তব্য করেছেন যে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, বরং পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং শুধু ঘোষণাতেই থেমে থাকেননি, তিনি নয় মাস রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর, ২০২৫) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুরাগ সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার পর রাজনীতিতে না এসে আবার নিজের পেশায় ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু নানা বিবর্তনের মধ্যে একসময় সিপাহী ও জনতা ৭ নভেম্বরে তাঁকে সামনে নিয়ে আসে এবং তিনি দেশের হাল ধরেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য তাঁর সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে স্মরণ করে বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মানুষের হৃদয়ে যে স্থান অর্জন করেছিলেন, তাঁর সহধর্মিণী পরবর্তী সময়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচিতি লাভ করেন। তিনি দাবি করেন, শত নির্যাতন, হামলা-মামলা খালেদা জিয়াকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। 'এরশাদকে যেতে হবে'— এই প্রতিশ্রুতি তিনি জাতিকে দিয়েছিলেন এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে তাঁর নেতৃত্বেই এরশাদকে বিদায় করা হয়।
শামসুজ্জামান দুদু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে "শয়তানও হয়তো তার তুলনায় কম ভয়ঙ্কর মনে হয়।" তিনি দাবি করেন, এই স্বৈরাচারকে বিদায় করার অন্যতম নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, "একটি পরিবার (জিয়া পরিবার) বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ থেকে স্বৈরাচার উৎখাত পর্যন্ত দুটি গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে।" অন্যদিকে তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারকে ‘ব্যাংক ডাকাত’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, শেখ হাসিনা প্রথম নন, তাঁর পরিবারের একজন শেখ মুজিবের জীবদ্দশায়ই এক বিখ্যাত ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন, গুম-খুন, দমন-পীড়ন ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে অচল অবস্থায় নিয়ে গেছেন। এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সাচ্চা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি শামীম মাহমুদ, অভিনেতা এ বি এম সোহেল রশিদসহ অনেকে।