✍️ লেখক – ইউনুস আহমেদঃ
বিয়ে ইসলামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় সুন্নত। এটি ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক, যুবক-যুবতীর চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে এবং এর মাধ্যমে অনেক সওয়াব অর্জিত হয়। এই পবিত্র বন্ধনের প্রথম ধাপ হলো পাত্র-পাত্রীর পরস্পরকে দেখা।
রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়, তাহলে সে যেন যথাসম্ভব ওই মহিলাকে দেখে নেয়।” (সুনানে আবু দাউদ : ২০৮২) এটি পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
আমাদের সমাজে পাত্র-পাত্রী দেখতে গিয়ে নগদ অর্থ বা অন্য কোনো হাদিয়া দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী, পাত্র-পাত্রী দেখাদেখির পর পাত্রের পক্ষ থেকে পাত্রীকে কিংবা পাত্রীর পক্ষ থেকে পাত্রকে হাদিয়া দেওয়া জায়েজ আছে। (কিতাবুন নাওয়াজেল : ৮/২৮)
এটি এক ধরনের সামাজিক প্রথা। যদি কোনো অঞ্চলে পাত্রীকে টাকা দেওয়ার প্রচলন থাকে, তাহলে তা দেওয়া যায়। আবার কারও বইয়ের প্রতি আগ্রহ থাকলে, তাকে ইসলামী বইপত্র উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। একইভাবে, মিষ্টি বা অন্য কোনো উপহার সামগ্রী নিয়ে যাওয়াও বৈধ। এসবই উপহার হিসেবে গণ্য হবে এবং উপহার-উপঢৌকন বিনিময় ইসলামে একটি পছন্দের বিষয়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, “তোমরা উপহার বিনিময় করো, পারস্পরিক সম্প্রীতি লাভ করবে।” (বোখারি, আল-আদাবুল মুফরাদ : ৫৯৪, আবু ইয়ালা : ৬১৪৮, সহিহুল জামে : ৩০০৪)
ইসলামে বিয়ের আগে পাত্রীকে গাইরে মাহরামদের (যাদের সাথে বিবাহ বৈধ) মধ্যে শুধু পাত্রই দেখতে পারবে। পাত্রের বাবা-ভাই, চাচা-মামা, দুলাভাই কিংবা বন্ধু কেউই পাত্রীকে সঙ্গে থাকতে পারবে না।
পাত্রীর শুধু কবজি পর্যন্ত হাত, টাখনু পর্যন্ত পা ও মুখমণ্ডল দেখাই পাত্রের জন্য বৈধ। এর বাইরে অন্য কোনো অঙ্গ আবরণ ছাড়া দেখা বৈধ নয়। এছাড়াও, নির্জনে পাত্র-পাত্রীর একত্র হওয়া বৈধ নয়। তবে, পাত্রের বাড়ির মহিলারা পাত্রীকে দেখতে পারবে। (আল-মাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ২২/১৭; সুরা নিসা : ২৩, তাফসিরে মাজহারি : ২/২৫৪)
এই নিয়মগুলো মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এতে বিবাহের পবিত্রতা ও ইসলামের নির্দেশনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়।