পেকুয়া প্রতিনিধি: “সুশাসনের জন্য দরকার তথ্যভিত্তিক পরিবীক্ষণ ও সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ”—এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অনুষ্ঠিত হলো একটি দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা। স্থানীয় সেবাখাতসমূহের তথ্য ও গবেষণা ভিত্তিক পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সুশীল সমাজ এবং নারী নেত্রীসহ ২৪ জন প্রতিনিধি।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় পেকুয়া উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আয়োজিত এই কর্মশালার আয়োজন করে ‘ভয়েস ফর চেইঞ্জ: এমপাওয়ারিং সিটিজেনস ফর ইনক্লুসিভ গভর্নেন্স, সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড ইকুয়ালিটি’ প্রকল্প। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (SDC) এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (GAC)-এর আর্থিক সহায়তায়।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন খান ফাউন্ডেশনের জেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আবু ছালাম, প্রকল্প কর্মকর্তা বেদেনা খাতুন এবং শামীমা ইয়াসমীন।
প্রশিক্ষণে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এম. আজিজুল হক আজিজ।
তিনি বলেন, “স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও সেবার মানোন্নয়নে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এই ধরনের প্রশিক্ষণ তরুণদের দক্ষ করে তুলবে এবং তাদের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার আরও জবাবদিহিমূলক হবে।”
দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা হাতে-কলমে শিখেছেন পরিবীক্ষণের মৌলিক ধারণা ও প্রয়োজনীয়তা, নাগরিক পরিবীক্ষণের কৌশল, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ ও এর প্রয়োগ, নাগরিকদের অংশগ্রহণে সেবাদান প্রক্রিয়ার মূল্যায়ন, কমিউনিটি স্কোরকার্ড পদ্ধতির ধাপসমূহ, স্থানীয় সরকারের সেবাদান কাঠামো ও জবাবদিহিতা, গবেষণা ও তথ্য বিশ্লেষণের ভূমিকা।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা স্থানীয় সমস্যা ও জনগণের চাহিদা যথাযথভাবে উপস্থাপন এবং প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরার কৌশল শিখেছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, তারা ভবিষ্যতে নিজেদের সংগঠনের মাধ্যমে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের সেবা পরিবীক্ষণ কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন।
স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি বলেন, এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে বুঝেছি, শুধু অভিযোগ করলেই হবে না; আমাদেরকেই সঠিক পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করে বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে হবে, যাতে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।”
‘ভয়েস ফর চেইঞ্জ’ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন। প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথ্যভিত্তিক সামাজিক পরিবীক্ষণ ও কমিউনিটি এনগেজমেন্ট কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।