পাকিস্তানকে নিজেদের ডেরায় পেয়ে যেন গর্জে উঠেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দাপট দেখিয়ে টানা দুই জয় তুলে নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা। এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই প্রথম জয় পেল টাইগাররা। এর আগে ছয়টি টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হলেও মাত্র একটি একক ম্যাচের সিরিজে জিতেছিল বাংলাদেশ। তাই এবার তৃতীয় ম্যাচে জয় পেলে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার ইতিহাস গড়বে শান্ত-লিটনরা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আগে ব্যাট করে পাকিস্তানকে ১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাইম রান আউট হন, করেন ৪ বলে ১ রান। এরপর দ্বিতীয় ওভারে ডাক আউট হন মোহাম্মদ হারিস। ফখর জামান ৮ বলে ৮ রান করে শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হন। পঞ্চম ওভারে তানজিম সাকিবের বলে হাসান নওয়াজ এবং মোহাম্মদ নওয়াজ ফিরে গেলে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক, কিন্তু ২৩ বলে ৯ রান করে মাহেদীর বলে আউট হন। তাকে সঙ্গ দেওয়া খুশদিল শাহও ১৮ বলে ১৩ রান করে ফেরেন। ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি দলের হাল ধরেন। আব্বাস ১৩ বলে ১৯ রান করে শরিফুলের বলে বোল্ড হলে ব্রেক থ্রু পায় বাংলাদেশ। ফাহিম একাই লড়াই চালিয়ে যান। ১৯তম ওভারে রিশাদের বলে বাউন্ডারি মেরে চমকে দিলেও, ৩২ বলে ৫১ রান করে শেষ বলে বোল্ড আউট হন। শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। আহমেদ দানিয়েল প্রথম বলে চার মেরে আশা জাগিয়েছিলেন, কিন্তু পরের বলেই বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ আউট হলে ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া শেখ মাহেদী ও তানজিম সাকিব দুটি করে এবং রিশাদ ও মোস্তাফিজুর রহমান একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ৩ রান করে দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ। লিটন কুমার দাস ৯ বলে ৯ রান করে ফেরেন এবং তাওহীদ হৃদয় রান আউট হন। এতে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের নায়ক পারভেজ ইমন ১৪ বলে ১৩ রান করে ক্যাচ আউট হলে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৯ রান তোলে টাইগাররা।
এরপর শেখ মাহেদী ও জাকের আলীর ব্যাটে ভর করে ১০ ওভারে ফিফটি তুলে নেয় টাইগাররা। ৪৯ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন তারা। মাহেদী ২৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হন। শামীম পাটোয়ারী ৪ বলে ১ রান, তানজিম সাকিব ৪ বলে ৭ রান এবং রিশাদ হোসেন ৪ বলে ৮ রান করে আউট হন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান জাকের আলী, ৪৬ বলে ফিফটি তুলে নেন। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়লেও তার ৪৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়াল ও আব্বাস আফ্রিদি। এছাড়া ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নওয়াজ নেন একটি করে উইকেট।