ঢাকাসোমবার , ২১ জুলাই ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কৃষি
  8. ক্যাম্পাস
  9. ক্রিকেট
  10. খেলাধুলা
  11. চাকরি
  12. জাতীয়
  13. তথ্য প্রযুক্তি
  14. দেশজুড়ে
  15. নগর-মহানগর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলা বাল্যবিবাহমুক্ত ও ৩টি ইউনিয়ন শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা: এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ

সাম্প্রতিক খবর ডেস্ক
জুলাই ২১, ২০২৫ ৪:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নেত্রকোণা, ২১ জুলাই ২০২৫: “শিশুশ্রমকে না বলি” এবং “আমার উপজেলা, আমার দায়িত্ব, শিশুর জীবন হোক বাল্যবিবাহমুক্ত” – এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত এবং আগিয়া, খলিশাউর, জারিয়া – এই তিনটি ইউনিয়নকে শিশুশ্রমমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি শিশু অধিকার রক্ষায় একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করে ‘গ্রাম উন্নয়ন সোসাইটি’, ‘শিশু ফোরাম’, ‘যুব ফোরাম’, ‘ধর্মীয়বৃন্দ’, ‘ইউনিয়ন পরিষদ’ ও ‘স্থানীয় সুশীল সমাজ’। এতে যৌথভাবে সহযোগিতা করেছে ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’ ও ‘উপজেলা প্রশাসন, পূর্বধলা, নেত্রকোনা’।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও পূর্বধলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব রেজওয়ানা কবির আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা প্রদান করেন। তিনি শিশুদের সুরক্ষা এবং তাদের ভবিষ্যৎ কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, “আজ থেকে এ উপজেলাকে ‘শিশুশ্রম’ ও ‘শিশুবিবাহ’ মুক্ত রাখতে প্রত্যেকের দায়িত্ব আরও অনেক বেশি বেড়ে গেলো।”

অনুষ্ঠানের শুরুতে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সিনিয়র ম্যানেজার প্রশান্ত নাফাক উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান। পরবর্তীতে এডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর জনাব তানজিমুল ইসলাম পুরো আয়োজনের উদ্দেশ্য, বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমের কুফলসহ নানাবিধ প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত তুলে ধরেন। তিনি সকলের নৈতিক দায়িত্বের গুরুত্ব সম্পর্কেও বিশদভাবে আলোকপাত করেন। আয়োজক গোষ্ঠী, পূর্বধলার স্থানীয় ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারসহ মোট ৩০০ জনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির এডভোকেসি কো-অর্ডিনেটরের বক্তব্যের সূত্র ধরে বলেন, শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ওয়ার্ল্ড ভিশন ও সহযোগী সংস্থাসমূহ ইতোমধ্যে যে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা সত্যিই অনুসরণীয়। তিনি জানান, তিনটি ইউনিয়নকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণার পূর্বে ১৫১ জন চিহ্নিত শিশুশ্রমিকের মধ্যে ২৫ জনকে ইতোমধ্যে স্কুলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যা অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। এছাড়া, ‘শিশু বিবাহ মুক্ত উপজেলা’ ঘোষণার পূর্বে ১২ থেকে ১৮ বছরের নিচে মেয়ে ও ১৪ থেকে ২১ বছরের নিচে ছেলেদের তালিকা সংগ্রহ করে সম্ভাব্য ঝুঁকিতে থাকা ২২,৫৮৩ জন ছেলেমেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তা আগামী দিনে সুফল বয়ে আনবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি উপস্থিত সকল সরকারি-বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের একত্রে কাজের এই গতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

সম্মানিত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জনাব শারমীন শাহজাদী এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “এ ব্যাপারে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় খুবই তৎপর! শিশু বিবাহ বন্ধে ওয়ার্ল্ড ভিশনের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।” তিনি ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকার আশ্বাস দেন।

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সচেতনতা বৃদ্ধি, জনসাধারণের সমন্বিত উদ্যোগ এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শক্তিশালী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যবহৃত ব্যাপক কৌশলগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে জড়িত সকলের নিষ্ঠার প্রশংসা করেন এবং শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে ধর্মীয় নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থনও দেখা যায়। তাঁরা শিশুদের সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে ধর্মীয় তাৎপর্য সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন, যা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বার্তাকে আরও জোরদার করে।

স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিগণ তাদের ইউনিয়নের বাল্যবিবাহমুক্ত মর্যাদা বজায় রাখার লক্ষ্যে উদ্যোগগুলির প্রতি অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া, যুব সদস্য অপূর্ব রায়ের উপস্থিতিতে তরুণদের উৎসাহী অংশগ্রহণ স্পষ্ট ছিল, যা শিশুদের জন্য একটি উজ্জ্বল, নিরাপদ ভবিষ্যতের প্রতি পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত দেয়।

‘শিশুশ্রম মুক্ত ইউনিয়ন’ ও ‘বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলার’ পৃথক দু’টি ঘোষণাপত্র পূর্বধলা উপজেলার জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা যখন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে, তখন যেকোনো চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করা সম্ভব।

সিনিয়র ম্যানেজার প্রশান্ত নাফাক তাঁর সমাপনী বক্তব্যে আশা ব্যক্ত করেন, “নিশ্চয়ই ‘শিশুশ্রম’ ও ‘বাল্যবিবাহের’ করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিটি শিশুর উন্নতির সুযোগ নিশ্চিত হবে একদিন!

” তিনি বলেন, এমন একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি স্টেকহোল্ডারের পাশাপাশি ‘জেলা শিশু কল্যাণ ও এডভোকেসি নেটওয়ার্ককে’ সাথে নিয়ে এই সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এই আশা ব্যক্ত করে তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে আজকের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।