ঢাকাবুধবার , ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. ইসলাম ও ধর্ম
  7. কৃষি
  8. ক্যাম্পাস
  9. ক্রিকেট
  10. খেলাধুলা
  11. চাকরি
  12. জাতীয়
  13. তথ্য প্রযুক্তি
  14. দেশজুড়ে
  15. নগর-মহানগর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তীব্র বিক্ষোভ ও সহিংসতায় নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, প্রেসিডেন্টও ইস্তফা দিয়েছেন

সাম্প্রতিক খবর ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫ ১২:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাম্প্রতিক খবর ডেস্কঃ নেপালে তীব্র বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ফেসবুকসহ ২৬টি সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার জের ধরে শুরু হওয়া ‘জেন-জি’ বিক্ষোভ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ওলির নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউএমএল) এবং নেপালি কংগ্রেসের জোট সরকারের পতন ঘটিয়েছে। একইসাথে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌড়েলও। সামরিক হেলিকপ্টারে করে ওলির কাঠমান্ডু ত্যাগের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গুঞ্জন চলছে যে তিনি দেশ ছেড়ে দুবাই পালানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত খবর মেলেনি। নেপালের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ এখনো অনিশ্চিত। পরিস্থিতি শান্ত ও নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী দায়িত্বভার নেবে বলে নেপালজুড়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রী ও রাজনীতিকদের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর শুরু করলে গতকাল দুপুর থেকে সেনাবাহিনী সব মন্ত্রী ও বড় দলের শীর্ষ নেতাদের হেলিকপ্টারে করে তাদের বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট থেকে অজ্ঞাত সেনাঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া শুরু করে। চলমান বিক্ষোভের কারণে নিরাপত্তা উদ্বেগে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সমস্ত বিমান বাতিল করা হয়েছে। পরে বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা গতকাল নেপালের পার্লামেন্ট ভবন ও একাধিক রাজনীতিকের বাড়িতে ও দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয়। রাজধানী কাঠমান্ডু রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং বিক্ষোভ দ্রুত অন্যান্য বড় শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে নেপালে।

কেপি শর্মা ওলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর একের পর এক প্রাক্তন ও বর্তমান মন্ত্রীর বাড়িতে উত্তেজিত জনতা আগুন দেয়। দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে রাস্তায় তাড়া করে মারধর করা হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং তার স্ত্রী আরজু রানা দেউবা (যিনি বর্তমান বিদেশমন্ত্রী) উভয়েই উত্তেজিত জনতার হাতে মার খেয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ এবং তার পরিবারও রেহাই পাননি। রাজধানী কাঠমান্ডুর ডাল্লু এলাকায় তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় বাড়িতে আটকে রাজ্যলক্ষ্মী নামের তার স্ত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান, যাকে কীর্তিপুর বার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সামাজিক মাধ্যমে রাজ্যলক্ষ্মীর ঝলসানো দেহের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ডের বাড়িতেও ছাত্র-যুবরা ভাঙচুর চালিয়েছে।

সরকারি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি, নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় দুটি জেলায় দুটি কারাগার ভাঙার ঘটনা নিশ্চিত করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। কাস্কি জেলার পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা কারাগারে প্রবেশ করলে ৭৭৩ জন বন্দি সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। এছাড়া তুলসীপুর কারাগার থেকে ১২৭ জন বন্দি পালানোর খবর দিয়েছে নেপালের ডাং প্রদেশের তুলসীপুরের এরিয়া পুলিশ অফিস। কোটেশ্বরে তিন পুলিশ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগও উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।

নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়ায় রুষ্ট জেন-জি বিক্ষোভকারীরা সোমবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায়। তারা দুর্নীতি এবং ব্যবস্থার সংকট নিয়েও প্রশ্ন তোলে। বিক্ষোভ পরে সহিংসতায় রূপ নিলে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীসহ ১৯ জন প্রাণ হারান। এরপরই আন্দোলন সরকারবিরোধী রূপ নেয়। সরকার সোমবার রাতে সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুললেও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ মূল দাবিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন দল এমনকি ওলির মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যও এই দাবিতে সংহতি জানান।

নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কমিউনিস্ট নেতা ওলি। এর আগে ২০১৫-১৬, ২০১৮-২১ এবং পরে ২০২১ সালে আরও একবার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, দৃঢ়চেতা অবস্থান ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্য পরিচিত ওলি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্থিরতা এবং কর্তৃত্ববাদী চর্চার অভিযোগ নিয়ে দায়িত্ব ছাড়লেন। যার দরুন দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পর নেপালেও প্রবল গণবিক্ষোভে সরকার পতন ঘটল।

বিক্ষোভকারীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি, লুটপাট ও সরকারি-বেসরকারি ভবনে আগুন দিচ্ছে উল্লেখ করে একটি বিবৃতিতে নেপালের সেনাবাহিনী বলেছে, এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে ‘সেনাবাহিনী সহ সমস্ত নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ সেনাবাহিনী বলেছে, ‘আমরা সকল নাগরিককে এই প্রচেষ্টায় সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার জন্য আবেদন করছি। পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার পরে আরও আপডেট জানানো হবে।

’ এদিকে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বিক্ষোভকারীদের সংলাপে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সেনাবাহিনী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।