যেখানে দিন শুরু হয় পাখির ডাকে, আর শেষ হয় সূর্যাস্তের সোনালি রঙে—সেই জায়গাটার নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এটি শুধু জ্ঞান অর্জনের কেন্দ্র নয়, বরং একটি শান্তিপূর্ণ ও সৃজনশীল পরিবেশের প্রতীক। এখানে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র একাডেমিক জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং তারা দিনশেষে এখানে মনের প্রশান্তি ও খুঁজে পায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আকর্ষণ এর পরিবেশ। সবুজ গাছগাছালি, খোলা প্রান্তর, পাখির গান, আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা শান্ত ক্যাম্পাস যে কাউকে মুগ্ধ করে। এখানে সকালবেলা হাঁটতে বের হলেই হিমেল বাতাস আর পাখির ডাক মনকে শান্ত করে দেয়। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার চাপ, ব্যস্ত রুটিনের মধ্যেও এই পরিবেশে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজে পায়।
এছাড়াও এটার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রাজনীতি মুক্ত শিক্ষা পরিবেশ। এখানে শিক্ষার্থীরা নিঃসংকোচে ও স্বাধীনভাবে শিক্ষা অর্জনে মনোনিবেশ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক একটি নিরুদ্বেগ ও মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলে। এছাড়াও শিক্ষকদের নিকট থেকে পাওয়া সহানুভূতি ও পেশাদারী দিক শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী এবং সৃজনশীল করে তোলে। এখানকার শিক্ষকেরা শুধু পাঠদানই করেন না, বরং শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে ।
শিক্ষার্থীরা প্রায়শই তাদের ক্যাম্পাসকে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ হিসেবে দেখে। এখানে একজন শিক্ষার্থী যেমন স্বাধীনভাবে ভাবতে পারে, তেমনি নিজের স্বপ্ন গড়ে তোলার সুযোগও পায়। তাছাড়াও শিক্ষকরা শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নন, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিক, নৈতিক ও পেশাগত বিকাশেও আন্তরিক।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারুক খান বলেন, “এই ক্যাম্পাসে হাঁটলে মনে হয় আমি নিজের সঙ্গে কথা বলছি। একাডেমিক ব্যস্ততার মাঝেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আমাকে এক অদৃশ্য শান্তি দেয়। এই ক্যাম্পাস আমার কাছে শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটা একধরনের মানসিক আশ্রয়। যখন সবকিছু খুব ভারী মনে হয়, তখন ক্যাম্পাস জুড়ে হাঁটাহাটি করি। প্রকৃতির ছোঁয়া আর এই জায়গাটার নিরব প্রশান্তি আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয় এর চেয়ে বড় সুখ আর কিছু হতে পারে না “।
রসায়ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী আল হাসান বলেন , “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমি সত্যিই খুব শান্তি পেয়েছি। ক্যাম্পাসের পরিবেশ এমন এক জায়গায় আমাকে নিয়ে এসেছে, যেখানে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের মানসিক প্রশান্তি অনুভব করতে পারি”।
এছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয় আমার দেখা অষ্টম আশ্চর্য। এখানকার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, শিক্ষা, উন্নত অবকাঠামো, বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব সবকিছুই আমার মন কেড়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, দৌড়ঝাঁপ, অনুষ্ঠান — সবই আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সত্যি এক শান্তির জায়গা। যেখানে শিক্ষার্থীরা শুধু কাগজে-কলমে শিক্ষা অর্জন করে না, বরং তাদের চিন্তা-ভাবনা, মূল্যবোধ এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশও ঘটে। এটি এক শান্তির জায়গা, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখতে পারে এবং তাদের জীবনকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে।