খুবি প্রতিনিধিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নেমে এসেছে বর্ষার নরম ছোঁয়া। বৃষ্টির ফোঁটায় ধুয়ে গেছে পথঘাট, সজীব হয়ে উঠেছে গাছপালা, আর সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাস যেন রূপকথার এক মায়াবী প্রান্তর। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। তবে বর্ষা এলে সেই সৌন্দর্যে যোগ হয় এক অন্য রকম মাত্রা যেখানে মেঘলা আকাশ, টিপটিপ বৃষ্টি আর সবুজের প্রলেপ মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বর, লেক পার্ক, ক্যাফেটেরিয়া কিংবা অনিকেত প্রান্ত সবখানেই এখন বৃষ্টির ছোঁয়ায় নতুন প্রাণের ছন্দ। শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে ছাতার নিচে হাঁটছেন, কেউবা লেকপাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছেন, আবার কেউ হাতে গরম চায়ের কাপ নিয়ে উপভোগ করছেন বৃষ্টির স্নিগ্ধতা। ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণে যেন একেকটি দৃশ্যপট, যেখানে প্রকৃতি তার সৃষ্টিশীলতার অপার মহিমা মেলে ধরেছে।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দিয়া তাবাসসুম বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য সবসময়ই নজরকাড়া, তবে বর্ষায় এটি আরও অনন্য হয়ে ওঠে। যদিও কিছু স্থানে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা রয়েছে, যার কারণে চলাচলে অসুবিধা হয় এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।”
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকপাড় আর অনিকেত প্রান্ত বর্ষায় সবচেয়ে সুন্দর লাগে। এই সময় লেকে শাপলা-পদ্ম ফুটে, গাছে গাছে নতুন পাতা আসে, নানা পাখি উড়ে বেড়ায় পুরো ক্যাম্পাস যেন প্রকৃতির সাজে নতুন জীবন পায়।”
এদিকে বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসছেন অনেক দর্শনার্থীও। দর্শনার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মানেই আবেগের এক জায়গা। বর্ষায় এখানে আসলে মনে হয় প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়ে তুলেছে এই স্থানটিকে। যা শুনেছিলাম, বাস্তবে তার চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষা শুধু ঋতু পরিবর্তন নয় এটি এক অনুভব, এক নান্দনিক অভিব্যক্তি। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন গল্প বলে, যেখানে সজীবতা, প্রশান্তি আর সৌন্দর্য মিলে যায় এক অপার মেলবন্ধনে। প্রতি বর্ষাতেই এই ক্যাম্পাস নতুন রূপে সেজে ওঠে, আর সেই সৌন্দর্য দীর্ঘদিন স্মৃতিতে থেকে যায় প্রত্যেক দর্শনার্থী ও শিক্ষার্থীর হৃদয়ে।