প্রেম বা সম্পর্কে জড়ানো যতটা সহজ মনে হতে পারে, ততটাই কঠিন তা শেষ করা। অনেক সময় সম্পর্ক এমন এক জায়গায় চলে যায়, যেখানে থাকা আর মানসিকভাবে স্বাস্থ্যকর থাকে না—তবুও একে অপরকে আঘাত না করে বা ঝগড়া-বিবাদ না করেই শান্তিপূর্ণভাবে ব্রেকআপ করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন শুধু কিছু সহমর্মিতা, পরিণত মানসিকতা এবং সৎভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ইচ্ছা।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে সম্মানের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করা যায় এবং তিক্ততা এড়িয়ে চলা যায়:
১. সরাসরি ও শান্তভাবে কথা বলুন (হঠাৎ সরে যাবেন না) ব্রেকআপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অনেকে হঠাৎ করেই কথা বলা বন্ধ করে দেন বা সম্পর্ক থেকে সরে যান, যা বিপরীত মানুষটিকে কষ্ট দেয় এবং বিভ্রান্ত করে তোলে। এর পরিবর্তে, উচিত হলো:
* শান্তভাবে, ব্যক্তিগতভাবে সময় নিয়ে তার সঙ্গে বসে কথা বলা।
* কী কারণে আপনি এই সিদ্ধান্তে এসেছেন, তা খোলাখুলি বলুন। হঠাৎ করে দূরে সরে গেলে তা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করে।
২. তাড়াহুড়ো না করে সময় নিন
সম্পর্কে কিছুটা সমস্যা থাকলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্রেকআপের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। একটু সময় নিন, চিন্তা করুন—এই সিদ্ধান্ত ক্ষণিকের রাগ নাকি আসলেই সম্পর্কটা আর ঠিকঠাক চলছে না। সময় নিয়ে ভেবে দেখলে সিদ্ধান্তটি গঠনমূলক এবং পরিপক্ব হবে।
৩. রাগ বা আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন
ঝগড়া বা তর্কের সময় হঠাৎ করে ‘ব্রেকআপ করি’ বা ‘তালাক দে’—এই ধরনের কথা বলে ফেলার প্রবণতা থাকে অনেকের। এই আবেগী কথাগুলো সম্পর্ক সাময়িকভাবে ঠিক হলেও, ভেতরে ভেতরে খোঁচা দিতে থাকে। তাই:
* আবেগী মুহূর্তে কিছু না বলে সময় নিন, নিজেকে শান্ত করুন।
* এরপর পরিস্থিতি বুঝে শান্ত মাথায় সিদ্ধান্ত নিন।
৪. সবকিছু সত্যি বলুন, মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না
অনেকেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেও সরাসরি বলার সাহস পান না। তখন নানা অজুহাত দেন, মিথ্যা বলেন বা সম্পর্ককে ধীরে ধীরে ঠান্ডা করার চেষ্টা করেন। এতে সম্পর্কটা বিষিয়ে ওঠে। এর চেয়ে সৎ হওয়া ভালো:
* সৎভাবে ও দায়িত্ব নিয়ে বলুন— “তোমার সঙ্গে সময়টা অনেক কিছু শিখিয়েছে, তবে এখন মনে হচ্ছে আমাদের পথ আলাদা হওয়া উচিত।”
* এতে সম্মান বজায় থাকে এবং সম্পর্ক শেষ হলেও অন্য মানুষটিকে ছোট করা হয় না।
একটি সম্পর্ক ভালোভাবে শুরু হওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সুন্দরভাবে শেষ করাও তেমনই দরকারি। কেউ যেন অপ্রস্তুত না হন বা হুট করে কষ্ট না পান—এটাই মানবিকতা। ঝগড়াঝাঁটি বা তিক্ততা নয়, সম্মান আর বোঝাপড়ার মাধ্যমে ব্রেকআপ হলে ভবিষ্যতে একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা থেকে যায়।

