প্রবীণ সাংবাদিক, সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতকে চট্টগ্রাম সাংবাদিক পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক-সম্পাদক-মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত-কে চট্টগ্রাম সাংবাদিক পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে। তাঁর এই মনোনয়ন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাংবাদিকতা জগতে একজন প্রবীণ, অভিজ্ঞ, এবং সাহসী ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করল।
মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত-এর দীর্ঘ পাঁচ দশকের কর্মজীবন নিম্নলিখিত মূল দিকগুলির জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:
মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক ভূমিকা: তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং হাটহাজারী ফটিকা আঞ্চলিক মুক্তিবাহিনী (বিএলএফ) প্রধান ছিলেন।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৬৪ সালের ভোটাধিকার আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।
সাহসী সাংবাদিকতা ও সম্পাদনা:
তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রতিষ্ঠিত ‘ইত্তেহাদ’ পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা এবং বিভিন্ন দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
তাঁর সম্পাদিত ‘ইজতিহাদ’ পত্রিকাটি ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকার নিষিদ্ধ করলেও, তিনি হাইকোর্টের মাধ্যমে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করান—যা তাঁর নির্ভীক সাংবাদিকতার উদাহরণ।
২০১৮ সালে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারারুদ্ধ করার প্রতিবাদে তিনি সারাদেশে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে সরব হন।
সাহসী সাংবাদিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালে তিনি তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া স্মৃতি পদক লাভ করেন।
২০২৪ সালের আগস্টে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লবের পর তাকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বিপ্লবী অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব:
তিনি ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন অব প্রেস কাউন্সিল (ডব্লিউ এপিসি)-এর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (সহ-সভাপতি), বাংলাদেশ সম্পাদক সমিতি (আহ্বায়ক), এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পারিবারিক ঐতিহ্য: তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগ, চট্টগ্রাম শাখার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী সমিতির প্রথম মুসলিম সভাপতি মরহুম আবদুল লতিফ উকিলের কনিষ্ঠ পুত্র।
বিশেষ সম্মাননা:
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক এবং ২০০৬ সালে কৃতী সাংবাদিক হিসেবে সংবর্ধিত। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ২০১৬ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধিত। ২০১৬ সালে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে সম্মাননা পদক লাভ। তাঁর এই মনোনয়ন চট্টগ্রাম সাংবাদিক পরিষদের জন্য একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অভিভাবকের দিকনির্দেশনা নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

