আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অবশেষে তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করল। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য একক প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন।
তবে এই প্রাথমিক তালিকায় দলটির আলোচিত নেত্রী এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার নাম না থাকায় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে, রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে দলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঘোষিত প্রাথমিক তালিকায় এই আসনটিতে আপাতত কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বাকি ৬৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয়নি। এই আসনগুলোর কিছু জোট শরিকদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে, এবং বাকিগুলোতে আলোচনার পর পরবর্তীতে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটিও শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে খালি রাখা হয়েছে।
প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য ওই দিন বেলা সাড়ে ১২টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর দলের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর বক্তব্যে জোটের রাজনীতি ও দলীয় প্রয়োজনের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন:
“আজকে ২৩৭ আসনে আমরা সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলাম। এরপর আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, সেই সমস্ত দলের সঙ্গে কথা বলে যে সমস্ত আসন আমরা ঘোষণা করিনি, তারা আসতে পারেন। অথবা আমাদের আসনও আমরা পরিবর্তন করতে পারি, এটা আমরা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিচ্ছি।”
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, এই তালিকাটি সম্ভাব্য ও উপযুক্ত প্রার্থীর তালিকা, এবং দলের প্রয়োজনে যেকোনো সময় এটি পরিবর্তন হতে পারে।
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি একাধারে নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি এবং জোট শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টনের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেল। বাকি ৬৩টি আসনে কারা স্থান পান এবং রুমিন ফারহানার মতো জনপ্রিয় নেত্রীর নির্বাচনী ভাগ্য শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

