মো: সোহেল আরমান,ষ্টাফ রিপোর্টার: কক্সবাজারের পেকুয়ায় আলোচিত শ্রমিকদল নেতা শহিদুল ইসলাম ওরফে শওকত (৩৫) হত্যাকাণ্ডের আসামিরা এখনও অধরা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পেকুয়া থানার এসআই সুনয়ন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ ও বাদীকে অসহযোগিতার গুরুতর অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনরা নতুন তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব প্রাপ্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিহতের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নিহতের ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. শাকের আলম, ছোট ভাই শাখাওয়াত হোসেন, মা হোসনে আরা বেগম ও স্ত্রী হাজেরা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে বাদী মো. শাকের আলম অভিযোগ করেন, গত বছরের ২৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার বড় ভাই শহিদুল ইসলাম ওরফে শওকতকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ছিলেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩১ আগস্ট তিনি ২০ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ০৭/২৪)। এ পর্যন্ত সাতজন আসামি কারাভোগ করেছে এবং বর্তমানে মামলার ২নম্বর আসামি সাজ্জাদ হোসেন, ৬ নম্বর আসামি ইমরান ও ১৯ নম্বর আসামি মাহান নুর এই তিনজন কারাগারে রয়েছে। তবে মামলার বেশিরভাগ আসামি এখনো পলাতক।
বাদী অভিযোগ করেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুনয়ন বড়ুয়া আসামিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের রক্ষা করছেন। তিনি বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) অভিজিৎ দাশ, ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তা পেকুয়া বাজারে আসেন। কিন্তু আমাকে বিষয়টি গোপন রেখে আসামি পক্ষকে অবগত করেন। এমনকি মিজবাহ উদ্দিন নামে এক আসামিকে ডেকে এনে তার কাছ থেকে সাক্ষ্যও নেন। এতে প্রশ্ন জাগে কীভাবে আসামি সাক্ষী হলো।
তিনি বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম এজাহারে আসেনি। তাই পরবর্তীতে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত বছরের ১০ ডিসেম্বর চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করি।
নিহতের মা হোসনে আরা বেগম সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
নিহতের স্ত্রী হাজেরা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। কিন্তু পুলিশের ভূমিকা সন্দেহজনক।
নিহতের ছোট ভাই শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছি। আমাদের জীবনও হুমকির মুখে। তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করায় আমরা আশঙ্কায় আছি।
তারা সবাই দ্রুত তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পরিবর্তন করে নতুন কর্মকর্তার হাতে মামলার তদন্তভার ন্যস্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুনয়ন বড়ুয়া জানান, পুলিশের অনেক কৌশল থাকে। আমরা আসামি ধরতে নানান কৌশল অবলম্বন করি। আসামিদের সাথেও কথা বলতে হয়। আমি মুলত তদন্ত কর্মকর্তা হলেও ঘটনার ক্লু উদঘাটনে সার্কেল স্যার ও ওসি স্যারও কাজ করছেন। তবে আমি বাদীর কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছিনা।

