জাকির হোসেন- টুটুল, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর তানোরে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে বাধাইড় ইউনিয়নের একান্নপুর- গোয়ালপাড়া মৌজার কৃষি জমির মাটি কেটে কৃষি জমি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের সক্রীয় কর্মী পলাশ আলী প্রায় ৪২ শতক কৃষি জমির উর্বর মাটি (টপসয়েল) কেটে কৃষি জমি ভরাট করেছে।
জানা গেছে জমিটি পলাশের স্ত্রী ও ঝিনাখৈর স্কুলের শিক্ষক নাজনিন খাতুনের নামে রেকর্ডভুক্ত। ওই জমি খনন করে উঁচু করার ফলে আশেপাশের কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কৃষি ফসলি জমির মাটি কাটা ও ভরাট করা না হলে তার দেখাদেখি অন্যরাও কৃষি জমির মাটি কাটতে উৎসাহিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশ আলী বলেন, “আমার ভাই পুলিশের চাকরি করে সেই আমাকে মাটি কাটতে বলেছে, তিনিই বিষয়টি দেখছেন। তার নির্দেশনা থাকায় আমরা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি।
এ বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, এমন কোনো ঘটনার খবর আমি এখনো পাইনি। বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাইমা খান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে শিক্ষক নাজনিন খাতুন বলেন, “আমর জানতাম শুধু পুকুর খনন করতে প্রশাসনের অনুমতি লাগে। জমি উঁচু করতে অনুমতির প্রয়োজন হয় এটা আমরা জানতাম না।
তবে আইন কী বলে বাংলাদেশে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন বা উর্বর মাটি কেটে অন্য কাজে ব্যবহার করা ‘কৃষিজমি রক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০২৪’ অনুযায়ী একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনের ৪ (১) ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি সরকার বা কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন, মাটি কর্তন বা ভরাট করতে পারবে না।”
আইনের ৮ (১) ধারা অনুযায়ী এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে। অতএব, অনুমতি ছাড়াই কৃষি জমির মাটি কেটে বাড়ি নির্মাণ বা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার কাজ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয়দের অভিযোগ-এভাবে কৃষি জমি নষ্ট হলে একদিকে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হবে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

