পরকীয়ার জেরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশের অভিযানে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলামকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তার দেখানো স্থান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা এবং নিহত ব্যক্তির এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত মো. হাসিবুল ইসলাম (২৬) নগরের ২ নম্বর গেট এলাকার একটি রেস্তোরাঁর কর্মচারী ছিলেন। তিনি ব্যবসায়ী মো. ইমরান বিন ইসলামের ছোট ভাই। প্রায় চার-পাঁচ মাস আগে হাসিবুলের সঙ্গে প্রীতি তানহা (২৪) নামের এক নারীর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়, যা এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়।
এই সম্পর্কের কথা জানতে পারেন তানহার স্বামী জাহেদুল ইসলাম। তিনি হাসিবুলকে একাধিকবার ফোনে হুমকিও দিয়েছিলেন।
৩ নভেম্বর দুপুরে জাহেদুল ইসলাম চা খাওয়ার কথা বলে হাসিবুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে আতুরার ডিপো সঙ্গীত আবাসিক এলাকার মন্নান সাহেবের বাড়ির সামনে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাহেদুল তার কোমর থেকে ধারালো ছোরা বের করে হাসিবুলের বুকে, পিঠে ও গলায় একাধিক আঘাত করে পালিয়ে যান।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা হাসিবুলকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের ভাই ইমরান বিন ইসলাম বাদী হয়ে পাঁচলাইশ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ অভিযানে নামে। পাঁচলাইশ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সোলাইমানের নেতৃত্বে একটি চৌকস আভিযানিক দল (যাদের মধ্যে ছিলেন মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, মোঃ মনিরুল ইসলাম, মোঃ নুরুল আবছার, ইমন দত্ত, জমির উদ্দিন, মোঃ আবু ছালেক এবং কনস্টেবল সাগর কান্তি শীল) তথ্যপ্রযুক্তি ও গুপ্তচরের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে।
৪ নভেম্বর রাত ২টা ২০ মিনিটে চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভীপুকুর পাড় এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে, জাহেদুলের দেখানো ও সনাক্ত স্থান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা এবং ভিকটিমের এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়।
পাঁচলাইশ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, “আমরা অভিযুক্তকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে তাকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।”

