চিলির সান্তিয়াগোর রাতটা আফ্রিকার ফুটবলের ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় রচনা করল। অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে শক্তিশালী আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ের গৌরব অর্জন করল উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। এই স্বপ্নের শিরোপা জয়ে নায়ক ছিলেন মরক্কোর তরুণ তারকা ইয়াসির জাবিরি, যিনি ফাইনালে একাই দুটি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
কোচ মোহাম্মদ ওয়াহবির মরক্কো যেন টুর্নামেন্টে এক অনবদ্য রূপকথা লিখে ফেলল। ফেভারিট না হয়েও তারা একে একে হারিয়েছে স্পেন, ব্রাজিল, ফ্রান্সের মতো পরাশক্তিদের এবং ফাইনালে টপকে গেল আর্জেন্টিনাকে। তাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র ছিল—দৃঢ় রক্ষণ, শৃঙ্খল এবং প্রাণঘাতী পাল্টা আক্রমণ। এই সাফল্যের কেন্দ্রে ছিলেন দুই তরুণ তারকা ওথমান মাম্মা ও ইয়াসির জাবিরি।
ফাইনালে শুরু থেকেই মরক্কো ছিল আক্রমণাত্মক। ম্যাচের ১২তম মিনিটেই জাবিরির দারুণ ফ্রি-কিক থেকে এগিয়ে যায় মরক্কো। আর্জেন্টিনার গোলকিপার ফাউল করার সুযোগে জাবিরি নিজেই নিখুঁত বাঁ পায়ের শটে বল জালে পাঠান।
এরপর ২৯তম মিনিটে আসে দ্বিতীয় গোল। মাম্মার গতি ও দক্ষতায় আর্জেন্টিনার রক্ষণ ছিন্নভিন্ন হওয়ার পর তার পাস ধরে জাবিরি আবারও নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান ২-০ করেন। এরপর মরক্কো তাদের রক্ষণ আরও দৃঢ় করে তোলে এবং আর্জেন্টিনার প্রতিটি আক্রমণ অসাধারণ সংবেদনশীলতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার কোচ দিয়েগো প্লাসেন্টের আনা পরিবর্তনগুলো কাজে আসেনি। সিলভেত্তি ও আন্দ্রাদার শটগুলো বারবার ব্যর্থ হয়েছে মরক্কোর গোলরক্ষক গোমিসের হাতে। একসময় হতাশায় ভুগতে থাকা আলবিসেলেস্তেরা বুঝতে পারে—ইতিহাস হাতছাড়া হতে চলেছে।
শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরিত হয় মরক্কোর উল্লাস। এক দশকের প্রচেষ্টা এবং যুব ফুটবলে ধারাবাহিক উন্নতির ফসল হিসেবে এই জয় আফ্রিকান ফুটবলের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। এই শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে মরক্কো কেবল একটি ট্রফিই জেতেনি, তারা ভবিষ্যতের ফুটবল মানচিত্র বদলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিল।

