আওয়ামী লীগকে দলগতভাবে বিচারের আওতায় এনে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ফয়সালা করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি মনে করেন, নির্বাহী আদেশে অস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার চেয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় দলটিকে নিষিদ্ধ করাই স্থায়ী সমাধান।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৪৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে তাকে জেরা করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কেননা তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই বিচারের আওতায় এনেই দলগত হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, অস্থায়ী সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগকে টেকাল দেওয়া যাবে না এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদেরও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি জানান, ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন জানানো হবে। তার মতে, “আদালতের কাছে এখন যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এসেছে। কারণ দলীয়প্রধান ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তাই জনগণই প্রতিরোধ করে তাকে উৎখাত করেছেন।” তিনি এই অপরাধকে আওয়ামী লীগের সংঘটিত রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
সাক্ষী নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ পৃথিবীর ইতিহাসে লেখা হয়ে থাকবে।
জেরার সময় আইনজীবী মো. আমির হোসেন নাহিদ ইসলামকে প্রশ্ন করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট তার ওপর চলা অত্যাচারের জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনো মামলা করেছেন কি-না।
জবাবে নাহিদ বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অন্যায় হয়েছে, সেসব সমগ্র জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব অন্যায় শুধুমাত্র ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছিল বলে মনে করিনি। সেজন্য ব্যক্তিগতভাবে কোনো মামলা করিনি।” তবে গুমের ঘটনায় তিনি গুম কমিশনে আলাদা অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।
এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এনসিপির এই আহ্বায়কের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু হয়। এদিন বেলা ১১টার পর দ্বিতীয় দিনের মতো তাকে জেরা করা হয় এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় জেরা শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

